আযানের সময় أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ তথা রাসুলে পাক (ﷺ) এর প্রিয় নাম মুবারক শ্রবণ করে আঙ্গুল চুমু করাকে দেওবন্দীরা বেদ‘আত এবং হারাম বলে থাকে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীরা আযানের সময় রাসূল করিম (ﷺ) এর নাম মুবারক শ্রবণে আঙ্গুল চুম্বু করাকে জায়েয এবং মুস্তাহাব বলে থাকে।
রাসূলে পাক (ﷺ) এর ইরশাদ মুবারক:আল্লামা মুহাম্মদ গাবরিম বিন মুহাম্মদ দাগেরী আল-মালেকী আশ‘আরী (رحمة الله) তাঁর কিতাব ‘নাওআফিহুল আত্যারিয়্যা’ এর মধ্যে একটি হাদিস শরীফ এনেছেন-قَالَ رَسُوْلُ اَللهِ ﷺ مَنْ مَسَحَ بِيَدِه اِسْمَ مُحَمَّدٍ ثُمَّ قَبَّلَ يَدَه بِشَفَتِهِ ثُمَّ مَسَحَ عَلٰى عَيْنَيْهِ يَرٰى رَبَّه بِمَا يَرَاهُ الصَّالِحُوْنَ وَ يَنَالُ شَفَاعَتِى وَلَوْ كَانَ عَاصِيًّا-
“রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ‘মুহাম্মদ’ নামটি হাতে স্পর্শ করে হাত দুটিকে হাতে চুম্বন করে অতঃপর করে অতঃপর তাকে চোখের মধ্যে মালিশ করবে সে নেককার বান্দাদের ন্যায় আল্লাহুকে দেখবে এবং সে আমার শাফায়াত লাভ করবে যদিও সে গুনাহগার হয়।’’৩১০৩১০. নাওআফিহুল আত্যারিয়্যা, ৫১ পৃ. মিশর হতে প্রকাশিত হযরত আদম (عليه السلام) এর আকিদা এবং রাসূলে পাক (ﷺ) এর আকিদা বিখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) তাঁর উল্লেখযোগ্য তাফসীর তাফসীরে ‘রুহুল বায়ানে’ লিখেন,وفِى قَصَصُ الْأَنْبِيَاء وَغَيْرِهَا اَنَّ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلام اِشْتَاقَ اِلَى لِقَاءِ مُحَمَّد صلى الله عليه وسلم حِيْنَ كَانَ فِى الْجَنَّةِ فَاَوْحَى اَللهُ تَعَالَى اِلِيْهِ هُوَ مِنْ صُلْبِكَ وَيَظْهَرُ فِى آخِرِ الزَّمَانِ فَسَأَلَ لِقَاءَ مُحَمَّد صَلى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَّلَّمَ حِيْنَ كَانَ فِى الْجَنَّةَ فَاَوحَى اَللهُ تَعَالى اِلَيْهِ فَجَعَلَ اَللهُ النُّوْرَ المُحَمَّدِي فِى إِصْبَعِه المُسَبَّحَةِ مِنْ يَدَه الْيُمْنَى فَسَبَّحَ ذَلِكَ النُّوْر فَلِذَلِكَ سُمِّيَتْ تِلْكَ الإَصْبَعُ مُسَبَّحَةً كَمَا فِى الرَّوْضِ الفَائِقْ. اَوْ اَظْهَرَ اَللهُ تَعَالى جَمال حَبِيْبِه فِى صِفَاءِ ظَفَرَىْ اِبْهَامَيْهِ مِثْلُ المِرَآةِ فَقَبَّلَ آدَمُ ظَفْرى اِبْهَامَيْهِ وَمَسَحَ عَلَى عَيْنَيْه فَصَارَ أَصْلًا لِذُرِّيَّتِه فَلَمَّا اَخْبَرَ جِبْرَائِيْلُ النَّبِيِّ صَلى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذِه القِصَّةِ قَالَ عَلَيْهِ السَّلَامُ (مَنْ سَمِعَ اِسْمِى فِى الْاَذَانِ فَقَبَّلَ ظَفَرَىْ اِبْهَامَيْهِ وَمَسَحَ عَلَى عَيْنَيْهِ لَمْ يَعْمِ اَبَدًا-‘‘কাসাসুল আম্বিয়া কিতাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত আদম (عليه السلام) জান্নাতে অবস্থানকালে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)‘র সাথে সাক্ষাতের জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করেন। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘য়ালা তাঁর নিকট ওহী প্রেরণ করেন যে, হে আদম! তিনি তোমার পৃষ্ঠ হতে শেষ যামানায় প্রকাশ হবেন। তা শুনার পর তিনি জান্নাতে অবস্থানকালে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানালেন। বিনিময়ে আল্লাহ্ তা‘য়ালা ওহী প্রেরণ করলেন, যে নূরে মুহাম্মদী (ﷺ) তোমার ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলীর মধ্যে স্থানান্তরিত করেছি, তখন সে অঙ্গ হতে তাসবীহ পাঠ আরম্ভ হলো। এজন্যই এই আঙ্গুলকে তাসবীহ পাঠকারী আঙ্গুল বলা হয়। যেমন ‘রওযাতুল ফায়েক’ কিতাবেও বর্ণিত আছে, অথবা আরেক বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহ্ তা‘য়ালা আপন হাবীব (ﷺ) এর সৌন্দর্য প্রকাশ করলেন দুই বৃদ্ধাঙ্গুলীর উপর যেভাবে আয়নাতে দেখা যায়। তখন আদম (عليه السلام) দুই বৃদ্ধাঙ্গুলে চুম্বুন করে স্বীয় চোখের উপর মালিশ করলেন। এটি দলীল হিসেবে প্রমাণিত হলো যে, তাঁর সন্তানাদীর জন্য। অতঃপর জিবরাঈল (عليه السلام) এই ঘটনা হুযূর (ﷺ) কে জানালেন। হুযূর (ﷺ) বললেন, যেই ব্যক্তি আযানের মধ্যে আমার নাম মোবারক শুনে দুই বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করবে আর চোখে মালিশ করবে, সে কখনো অন্ধ হবে না।’’ ৩১১৩১১.আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বয়ান : ৭/২২৯ পৃ. সূরা মায়েদা আয়াত : ৫৭ নং এর ব্যাখ্যা, আবদুর রহমান ছাফুরী, নুযাহাতুল মাযালিস, ২/৭৪ পৃ.হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه)’র আকিদা :আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) তাঁর প্রসিদ্ধ তাফসীরে রুহুল বয়ানে বলেন,ودر محيط آورده كه پيغمبر صلى الله عليه وسلم بمسجد درآمد ونزديك ستون بنشست وصديق رضى الله عنه در برابر آن حضرت نشسته بود بلال رضى الله عنه برخاست وباذان اشتغال فرمود چون گفت اشهد ان محمدا رسول الله ابو بكر رضى الله عنه هر دو ناخن ابهامين خود را بر هر دو چشم خود نهاده گفت قرة عينى بك يا رسول الله چون بلال رضى الله عنه فارغ شد حضرت رسول صلى الله عليه وسلم فرموده كه يا أبا بكر هر كه بكند چنين كه تو كردى خدائے بيامرزد كناهان جديد وقديم او را اگر بعمد بوده باشد اگر بخطا-‘‘মুহিত গ্রন্থে এসেছে একদা হুযুরে পাক (ﷺ) মসজিদে প্রবেশ করে একটি খুঁটির পাশে বসে পড়েন। হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ও তাঁর পাশে বসে পড়লেন। ইত্যবস্যারে আযানের সময় হলে হযরত বেলাল (رضي الله عنه) দাঁড়িয়ে আযান দিতে শুরু করলেন। তিনি যখন أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ উচ্চারণ করলেন হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) তাঁর দু’আঙ্গুলির পিঠের উপর চুমু খেয়ে দু’ চোখের উপর রেখে বলতে লাগলেন-قُرَّةَ عَيْنِى بِكَ يَا رَسُوْلَ اَللهহযরত বেলাল (رضي الله عنه) আযান শেষ করলে রাসূলে পাক (ﷺ) বলতে লাগলেন, আবু বকর যে ব্যক্তি আপনার অনুরূপ আমল করবে আল্লাহ তা‘য়ালা তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’’ ৩১২৩১২. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৭ম খণ্ড, ২২৯ পৃ., দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।ইমাম আবু তালেব মুহাম্মদ বিন আলী মাক্কী (رحمة الله)’র আকিদা:ইমাম আবু তালেব মুহাম্মদ বিন আলী মক্কী (رحمة الله) এর অনাবদ্য রচনা “কুউয়াতুল কুলুব’’ গ্রন্থের হাওয়ালা দিয়ে বিখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) বলেন-وحضرت شيخ امام ابو طالب محمد بن على المكي رفع الله درجته در قوت القلوب روايت كرده از ابن عيينه رحمه الله كه حضرت پيغمبر عليه الصلاة والسلام بمسجد درآمد در دهه محرم وبعد از آنكه نماز جمعه ادا فرموده بود نزديك أسطوانة قرار كرفت وابو بكر رضى الله عنه بظهر ابهامين چشم خود را مسح كرد وكفت قرة عينى بك يا رسول الله و چون بلال رضى الله عنه از أذان فراغتى روى نمود حضرت رسول الله صلى الله عليه وسلم فرمود كه اى أبا بكر هر كه بگويد آنچهـ تو كفتى از روى شوق بلقاى من وبكند آنچهـ تو كردى خداى دركذارد كناهان ويرا آنچهـ باشد نو وكهنه خطا وعمد ونهان وآشكارا-“হযরত শায়খ ইমাম আবু তালেব মুহাম্মদ বিন আলী মক্কী (رحمة الله) বলেন, তাবেয়ী ইমাম ইবনে উয়াইনা (رحمة الله) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলে খোদা (ﷺ) ১০ ই মুহররাম জুম‘আর নামাজের জন্য মসজিদে তাশরীফ নিয়ে একটি খুঁটির নিকট বসে পড়লেন। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) তাঁর দু’আঙ্গুলির পিঠে চুমু খেয়ে চোখের মধ্যে মালিশ করে বললেন قُرَّةَ عَيْنِى بِكَ يَا رَسُوْلَ اَلله। হযরত বেলাল (رضي الله عنه) আযান শেষ করার পর রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করলেন, আবু বকর আমার মুহাব্বতে আপনি যা কিছু করেছেন এবং যা বলেছেন যে আপনার ন্যায় করবে আল্লাহ তা‘য়ালা তার পূর্বা-পর এবং প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সবগুনাহ ক্ষমা করবেন।’’ ৩১৩৩১৩. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৭ম খণ্ড, ২২৯ পৃ., দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।আল্লামা শাসমুদ্দিন সাখাবী (رحمة الله) এর আকিদা:আল্লামা সাখাবী (رحمة الله) দায়লামী শরীফের রেফারেন্স দিয়ে বলেন-حَدِيثِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ أَنَّهُ لَمَّا سَمِعَ قول المؤذن أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّد رَسُوْلُ اَلله قَالَ هَذَا، وَقَبَّلَ بَاطِنَ الأُنْمُلَتَيْنِ السَّبَّابَتَيْنِ وَمَسَحَ عَيْنَيْهِ، فَقَالَ ﷺ : مَنْ فَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ خَلِيلِي فَقَدْ حَلَّتْ عَلَيْهِ شَفَاعَتِي،-‘‘হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি মুয়ায্যিনকে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার’ রাসূলূল্লাহ বলতে শোনলেন, তখন তিনিও তা বললেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে নিলেন। তা দেখে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর ন্যায় আমল করবে, তার জন্য আমার সুপারিশ বৈধ হয়ে গেল।’’ ৩১৪৩১৪.ক. ইমাম আবদুর রহমান সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৩৮৩ পৃ. : হা/১০২১খ. আল্লামা ইমাম আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৫৯ পৃ. হা/২২৯৬গ. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : আসরারুল মারফূ : ৩১২ পৃ. হা/৪৫৩ঘ. আল্লামা ইমাম তাহতাভী : মারাকিল ফালাহ : ১৬৫ পৃ., কিতাবুল আযানঙ. শাওকানী, ফাওয়াহিদুল মাজমু‘আহ ফি আহাদিসিল মাওদ্বুআহ: ১/৩৯ পৃ.চ. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৭/২২৯ পৃ.ছ. আল্লামা তাহের পাটনী : তাযকিরাতুল মওদ্বুআত : ৩৪ পৃ.জ. আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়তী : লা-আলীল মাসনূআ : ১৬৮-১৭০ পৃ.ঝ. আল্লামা আব্দুল হাই লাখনৌভী : আসারুল মারফূআহ, ১৮২ পৃ.ঞ. আলবানী : সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ১/১০২ পৃ. হা/৭৩সায়্যিদুনা ইমাম হাসান (عليه السلام)’র আক্বিদা:ইমাম সাখাভী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-وروي عَن الفَقِيْه مُحَمَّد بْن سَعِيْد الخولاني قَالَ: أَخْبَرْنِي الفَقِيْه العَالِمْ أَبُو الْحَسَن عَلِي ابْنِ مُحَمَّد بْن حَدِيْد الحُسَيْنِي أَخْبَرْنِي الفَقِيْه الزَّاهِد البِلَالِي عَنْ الحَسَنْ عَلَيْهِ السَّلَامْ أَنَّهُ قَالَ: مَنْ قَالَ حِيْنَ يَسْمَعُ المُؤَذِّنَ يَقُوْلُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ الله: مَرْحَبَا بِحَبِيْبِي وَقُرَّةُ عَيْنِي مُحَمَّد بْنِ عَبْدُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُقَبِّلُ إِبْهَامَيْهِ وَيَجْعَلْهُمَا عَلى عَيْنَيْهِ لَمْ يَعْمِ وَلَمْ يَرْمُد-‘‘ফকীহ মুহাম্মদ বিন সাঈদ খুলানী (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমাকে ফকীহ আলেম আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মদ বিন হাদীদ আল-হুসাইনী (رحمة الله) বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন, আমাকে ফকীহ যাহেদ বেলালী (رحمة الله) বলেছেন যে, সায়্যিদুনা ইমাম হাসান (عليه السلام) বলেছেন, মুয়ায্যিন হতে أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّد رَسُوْلُ اَلله শুনে যে ব্যক্তি مَرْحَبَا بِحَبِيْبِي এবংقُرَّةُ عَيْنِي مُحَمَّد بْنِ عَبْدُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَবলে দুআঙ্গুলে চুমু খেয়ে দুচোখে মালিশ করবে সে কখনো অন্ধ হবে না এবং তার চোখে কখনো রোগ হবে না।’’ (ইমাম সাখাভী, মাকাসিদুল হাসানা, ৬০৬ পৃ. হা/১০২১)হযরত খিজির (عليه السلام)’র আকিদা:ইমাম সাখাভী (رحمة الله) সংকলন করেন-ما أورده أبو العباس أحمد ابن أبي بكر الرداد اليماني المتصوف في كتابه موجبات الرحمة وعزائم المغفرة بسند فيه مجاهيل مع انقطاعه، عن الخضر عليه السلام أنه: من قال حين يسمع المؤذن يقول أشهد أن محمد رسول اللَّه: مرحبا بحبيبي وقرة عيني محمد بن عبد اللَّه ﷺ ، ثم يقبل إبهاميه ويجعلهما على عينيه لم يرمد أبدا–‘‘ইমাম আবু আব্বাস আহমদ বিন আবি বকর ইয়ামানী (رحمة الله) তাঁর লিখিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ موجبات الرحمة و عزائم المغفرة এর মধ্যে হযরত খিযির (عليه السلام) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসূলূল্লাহ’ শোনে বলবে مَرْحَبَا بِحَبِيْبِي وَقُرَّةُ عَيْنِي مُحَمَّد بْنِ عَبْدُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَমারহাবা বি হাবিবি ওয়া কুররাতো আইনী মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (ﷺ)) অতঃপর স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে, তাহলে তার চোখে কখনও ব্যথা হবে না এবং সে কোন দিন অন্ধ হবে না।’’ ৩১৫৩১৫.ক. আল্লামা ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ১/৩৮৩ : হা/১০২১খ. আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৭০ : হা/২২৯৬গ. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মওদ্বুআতুল কাবীর : ১০৮ পৃ.ঘ. মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী : জাআল হক : ২/২৪৬ পৃ.ইরাকের বুযুর্গদের আকিদা:আল্লামা সাখাবী (رحمة الله) বলেন, আল্লামা ইবনে সালেহ (رحمة الله) বর্ণনা করেন, وسمعت ذلك أيضا من الفقيه محمد بن الزرندي عن بعض شيوخ العراق أو العجم أنه يقول عندما يمسح عينيه: صلى اللَّه عليك يا سيدي يا رسول اللَّه يا حبيب قلبي ويا نور بصري ويا قرة عيني، وقال لي كل منهما: منذ فعلته لم ترمد عيني-‘‘আমি ফকীহ মুহাম্মদ বিন যারানাদি (رحمة الله) হতে শ্রবণ করেছি তিনি ইরাক ও আজমের বড় শায়খ হতে বর্ণনা করেছেন, হুযূর (ﷺ) এর নাম মোবারক আযানের মধ্যে শ্রবণ করে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ে চুমু দিয়ে চোখে মালিশ করিবে তারপর বলবে-صلى الله عليك يا سيدى يا رسول الله يا حبيب قلبى و يا نور بصرى و يا قرة عينىদুজন শায়খই বলছেন, যখন থেকে আমরা এই আমল করতে লাগলাম তখন থেকে আমাদের চোখ কোনদিন অসুস্থ হয়নি।’’ ৩১৬৩১৬.ক. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৩৮৪ পৃ. হা/১০২১খ. আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৭০ পৃ. : হা/২২৯৬গ. মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী : জা’আল হক : ২/২৪৯ পৃ.আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) এর আকিদা:হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব শামী শরীফে আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) তাঁর ফতোয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে শামীতে باب الاذان লিখেন-يُسْتَحَبُّ أَنْ يُقَالَ عِنْدَ سَمَاعِ الْأُولَى مِنْ الشَّهَادَةِ: صَلَّى اللَّهُ عَلَيْك يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَعِنْدَ الثَّانِيَةِ مِنْهَا: قَرَّتْ عَيْنِي بِك يَا رَسُولَ اللَّهِ، ثُمَّ يَقُولُ: اللَّهُمَّ مَتِّعْنِي بِالسَّمْعِ وَالْبَصَرِ بَعْدَ وَضْعِ ظُفْرَيْ الْإِبْهَامَيْنِ عَلَى الْعَيْنَيْنِ فَإِنَّهُ – عَلَيْهِ السَّلَامُ – يَكُونُ قَائِدًا لَهُ إلَى الْجَنَّةِ، كَذَا فِي كَنْزِ الْعِبَادِ.-‘‘মুস্তাহাব হলো আযানের সময় শাহাদাত বলার সময়ের মধ্যে صَلَّى اللَّهُ عَلَيْك يَا رَسُولَ اللَّهِ বলা এবং দ্বিতীয় শাহাদাত বলার সময় বলবে قَرَّتْ عَيْنِي بِك يَا رَسُولَ اللَّهِ অতঃপর নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখে চুমু খেয়ে স্বীয় চোখদ্বয়ের উপর রাখবে এবং এই দোয়াটি اللَّهُمَّ مَتِّعْنِي بِالسَّمْعِ وَالْبَصَرِ পড়বে এর ফলে হুযূর (ﷺ) তাকে নিজের পিছনে পিছনে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন।’’ ৩১৭৩১৭.ক. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী : ফতোয়ায়ে শামী ১/৩৯৮ পৃষ্ঠা কিতাবুল আযান অধ্যায়খ. মুফতী আমিমুল ইহসান মুজাদ্দেদী : কাওয়াইদুল ফিক্হ : ১/২৩৩ পৃ.গ. ইমাম আহমদ রেযা খাঁন : আহকামে শরীয়ত : ১/১৭২ পৃ.ঘ. ইমাম আহমদ রেযা : ফতোয়ায়ে আফ্রিকা : ৭৮ পৃ.ঙ. মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী : জা‘আল হক্ব : ২/২৪৬ পৃ.চ. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৭/২২৯ পৃ.ইমাম কাহাস্তানী (رحمة الله) এর আকিদা: আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) উপরোক্ত ইবারত লেখার বলেন-كَذَا فِي كَنْزِ الْعِبَادِ. اهـ. قُهُسْتَانِيٌّ، وَنَحْوُهُ فِي الْفَتَاوَى الصُّوفِيَّةِ. وَفِي كِتَابِ الْفِرْدَوْسِ مَنْ قَبَّلَ ظُفْرَيْ إبْهَامِهِ عِنْدَ سَمَاعِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ فِي الْأَذَانِ أَنَا قَائِدُهُ وَمُدْخِلُهُ فِي صُفُوفِ الْجَنَّةِ وَتَمَامُهُ فِي حَوَاشِي الْبَحْرِ لِلرَّمْلِيِّ عَنْ الْمَقَاصِدِ الْحَسَنَةِ لِلسَّخَاوِيّ–‘‘অনুরূপভাবে কানযুল ইবাদ এবং ইমাম কাহাস্তানী (رحمة الله) এর গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে। একইভাবে ফতোয়ায়ে ছুফিয়া এবং কিতাবুল ফিরদাউসের মধ্যে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি আযানের শাহাদাত শুনে নিজ আঙ্গুলের নখে চুমু দেবে সে জান্নাতে রাসূলে পাক (ﷺ)-এর সাথে থাকবে। তাকে জান্নাতের কাতারে প্রবেশ করানো হবে এবং সম্পূর্ণ আলোচনা এবং ব্যাখ্যা বাহরূর রায়েকের হাশিয়ার মধ্যে রয়েছে।’’ ৩১৮৩১৮. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী : ফতোয়ায়ে শামী ১/৩৯৮ পৃষ্ঠা কিতাবুল আযান অধ্যায়ইমামুল মুফাস্সিরিন আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) নিজেও ইমাম কাহাস্তানী (رحمة الله) এর ইবারতটুকু তাফসীরে রুহুল বয়ানে এনেছেন। ৩১৯৩১৯. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৭/২২৯ পৃ.আল্লামা তাহতাবী (رحمة الله) এর আক্বিদা:হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব হাশীয়ায়ে তাহতাবী শরীফের মধ্যে রয়েছে-ذَكَرَ القهستَانِي عَنْ كَنْزِ الْعبادِ أَنَّهُ يَسْتَحِبُّ أَنْ يَقُوْلَ عِنْدَ سَمَاعِ الأوْلى مِنَ الشَّهَادَتَيْنِ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى اَللهُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَعِنْدَ سِمَاعِ الثَّانِيَةِ قُرَّتُ عَيْنِي بِكَ يَا رَسُوْلَ اَللهِ اَللهم مَتِّعْنِي بِالْسَّمْعِ وَالْبَصَرِ بَعْدَ وَضْعِ إِبْهَامَيْهِ عَلى عَيْنَيْهِ فَإِنَّه صَلَّى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ قَائِدًا لَه فِي الْجَنَّةِ وَذَكَرَ الدَّيْلَمِي فِي الْفِرْدَوْسِ مِنْ حَدِيْثِ أَبِي بَكْر الصِّدِّيْق رَضِي اَللهُ عَنْهُ مَرْفُوْعًا مَنْ مَسْحٍ الْعَيْنَيْنِ بِبَاطِنِ أَنْمِلَةِ السَّبَابَتَيْنِ بَعْدَ تَقْبِيْلِهِمَا عِنْدَ قَوْلِ الْمُؤَذِّنِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اَللهِ وَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه رَضِيْتُ بِاللهِ رَبَّا وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنَا وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي اهـ وَكَذَا رُوِيْ عَنْ الْخِضِر عَلَيْهِ السَّلَامِ وَبِمِثْلِه يُعْمَلُ فِي الْفَضَائِلِ-‘‘আল্লামা কাহাস্তানী (رحمة الله) কানযুল ইবাদে উল্লেখ করেছেন, মুস্তাহাব হল-মুয়াজ্জিন যখন ১ম শাহাদাত বলবেন শ্রবণকারীصَلَّى اَللهُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهবলবে। ২য় শাহাদাতের পর বলবেقُرَّتُ عَيْنِي بِكَ يَا رَسُوْلَ اَللهِ اَللهم مَتِّعْنِي بِالْسَّمْعِ وَالْبَصَرএ সময় নিজ আঙ্গুলিকে চোখের উপর রাখবে তবে রাসূল (ﷺ) জান্নাতে তার কায়েদ হবেন। আর ইমাম দায়লামী (رحمة الله) ফিরদাউস নামক গ্রন্থে বলেন হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত আছে, শাহাদাত শ্রবণের সময় দু’হাতের দু’আঙ্গুলের চুমু খেয়ে চোখের উপর মালিশ করবে। এ সময় বলবে-أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه رَضِيْتُ بِاللهِ رَبَّا وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنَا وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اَللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّاরাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, এরূপ আমলকারীর জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হবে। অনুরূপভাবে হযরত খিজির (عليه السلام) হতে বর্ণিত আছে, এবং যা ফাযায়েল আমল হিসেবে আমল করা যায়।’’ (আল্লামা তাহতাভী, হাশীয়ায়ে তাহতাভী আ‘লা মারাকিল ফালাহ, ২০৬ পৃ.)হাদিস শাস্ত্রের মহান শিক্ষক আল্লামা শামসুদ্দিন মুহাম্মদ বিন আবু নাসের বুখারী (رحمة الله) এর আকিদা:ইমামুল মুহাদ্দিস শামসুদ্দিন সাখাবী (رحمة الله) হযরত ইমাম তাউসী (رحمة الله) বলেন, আমি আবু নসর বুখারী (رحمة الله) কে হাদিস বর্ণনায় শুনেছি যে,قَالَ الطاوسي: إِنَّهُ سَمَعَ مِنَ الشَّمْس مُحَمَّد اِبْنِ أَبِي نَصْر البُخَارِي خواجه حديث: مَنْ قَبَّلَ عِنْدَ سمَاعَه مِنَ الْمُؤَذِّن كَلِمَة الشَّهَادَة ظَفَرَيْ إِبْهَامَيْهِ وَمَسَحَهُمَا عَلى عَيْنَيْهِ وَقَالَ عِنْدَ الْمَسِّ: اَللَّهُمَّ اِحْفَظْ حَدَقَتَيْ وَنُوْرِهِمَا بِبَرْكَةِ حَدَقَتَيْ مُحَمَّدٍ رَسُوْل اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنُوْرِهِمَا لَمْ يَعْمِ-‘‘কোন ব্যক্তি মুয়ায্যিনকে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলতে শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে স্পর্শ করবে এবং এই দোয়া পাঠ করবে,اَللَّهُمَّ اِحْفَظْ حَدَقَتَيْ وَنُوْرِهِمَا بِبَرْكَةِ حَدَقَتَيْ مُحَمَّدٍ رَسُوْل اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنُوْرِهِمَاতাহলে সে কখনো অন্ধ হবে না।’’ ৩২০৩২০. ক. আল্লামা ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ১/২৮৫ পৃ. হা/১০২১খ. আল্লামা আজলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৭১ পৃ. হা/২২৯৬গ. মুফতি আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী : জা’আল হক : ২/২৪৬ পৃ.।সুতরাং কুরআন হাদিসের আলোকে বুঝা গেল আহলে হাদীস এবং দেওবন্দীরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত নয়।