খুতবার পূর্বে জুমার ২য় আযান সর্বসম্মতিক্রমে সুন্নাত। ওই আযান ইমামের সামনা – সামনি মসজিদের দরজায় এবং মসজিদের ভিতরে মিম্বরের কাছে খতিবের সামনে দেয়া যায়। উভয়টা শরিয়ত সম্মত। উভয় পদ্ধতিতে সুন্নাত আদায় হয়ে যায়। মসজিদের দরজায় খুতবার আযান দেয়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

আর ইমামের সামনে দেয়া সম্পর্কে ওমদাতুর রিয়ায়া হাশিয়ায়ে শরহে বেকায়া ও হেদায়াসহ বহু ফিকহের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।সুতরাং যেখানে যেভাবে প্রচলন আছে সেভাবেই আমল করতে অসুবিধা নেই। অর্থাৎ খুতবার আযান মসজিদের দরজায় খতিবের সামনে অথবা মিম্বরের কাছে দেয়া উভয়টা জায়েয।

তাছাড়া , জুমার ২য় আযান মিম্বরের কাছে খতিবের সামনে দেয়ার বিধান ও আমল যুগ যুগ ধরে চলে আসছে – যাকে বিভিন্ন ফিকহের কিতাবে جري به التوارث  হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে এ নিয়ম চলে আসছে। ‘তাওয়ারুস’ সম্পর্কে রদ্দুল মোহতার তথা ফতোয়ায়ে শামীতে উল্লেখ রয়েছে- الموارث لايكون مكروها অর্থাৎ যা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত তা মকরুহ হতে পারে না। আরো উল্লেখ করা হয়েছে-  وكذالك تقول في الاذان بين الخطيب فيكون بدعة حسنة اذ ما رأه المؤمنون او المسلمون حسنا فهو عند الله حسن  অর্থাৎ যেভাবে তুমি বলবে খতিবের সামনে প্রদত্ত আযান সম্পর্কেও সুতরাং তা বিদয়াতে হাসানা।কেননা মুমিনগণ যে বস্তুকে ভাল হিসেবে জানে তা আল্লাহর কাছেও উত্তম হিসেবে পরিগণিত। সুতরাং হাজার বছরের চেয়েও আরো অধিককাল থেকে আপন আপন যুগের ফোকাহায়ে কেরাম ও মুমিনগণ যখন এটাকে আমলে পরিণত করেছেন।

তাহলে আমাদের বুঝে নিতে হবে এটা আল্লাহর কাছে উত্তম/ভাল। আর এটা চিরসত্য ও স্বীকৃত যে, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী হানাফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি- ( ফতোয়ায়ে শামীর লেখক ) ও ইমাম মরগিনানী ( হেদায়া গ্রন্থের লেখক ) তাদের পরবর্তী ওলামায়ে কেরাম ও ফকীহগণের চেয়ে অনেক বেশি বিজ্ঞ ও ফিকহ্‌ ফতোয়া সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। অতএব, এ মাসআলা নিয়ে অহেতুক বিতর্কে না জড়ানো উচিত। যেখানে যেনিয়ম চালু আছে সেখানে সেভাবে আমল করবে। [হেদায়া শরহে বেকায়া , ওমদাতুর রিয়ায়া, রদ্দুল মুখতার – নামাজ অধ্যায়, আমার রচিত যুগ জিজ্ঞাসা ইত্যাদি]

[মাসিক তরজুমান, পৃঃ ৫৭, মুহররম ১৪৪৫ হিজরি, জুলাই – আগষ্ট ২০২৩। উত্তর দাতা- অধ্যক্ষ মুফ্‌তী সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান মঃ জিঃ আঃ]

এব্যাপারে আরো আলোচনা আসবে ইনশাআল্লাহ