সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি মানব জাতিকে ماء دافق বা কুর্দনকারী পানি হতে সৃষ্টি করেছেন। তাদেরকে ঐ জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানত না। দুরূদ সালামের হাদিয়া তোহ্ফা ঐ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র পবিত্র চরণ যুগলে, যিনি সর্বযুগের সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের প্রতিভূ যাকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকুলের জন্য শিক্ষা দাতা ও রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, মহান মোর্শেদে মোকাম্মেল (ম.জি.আ.) কে যার পাক ছোহবতে এসে লাখো-লাখো পথহারা মানুষ সঠিক পথের সন্ধান পাচ্ছে। যিনি তাঁর পুরো হায়াত মানুষকে সঠিক পথ ও আকায়েদ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের মতাদর্শ শিক্ষা দানের জন্য কুরবানি দিয়ে যাচ্ছেন।আল্লাহর দেয়া জ্ঞান বিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে মানবজাতি আজ নানাবিধ গবেষণার ক্ষেত্রে চরম উৎকর্ষ সাধন করেছে। গবেষণার ফলাফল হিসেবে আমরা বলতে পারি পুরো পৃথিবীটা একেবারে হাতের মুঠোয় এসেছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে পুরো পৃথিবীটা একটি গ্রামের মতো। সবাই সবার সাথে যখন তখন যোগাযোগ করতে পারে। তাই বর্তমানে পৃথিবীটা হলো……………………………….. বা বৈশ্বিক গ্রাম।এটা সম্ভব হয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তি যোগাযোগ নিয়ে গবেষণা ও তার ফলাফলকে বাস্তবরূপ দানের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে যে প্রযুিক্তটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে, তা হচ্ছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স।তাই আমরা বলে থাকি বর্তমানে যুগটাই হলো ডিজিটাল যুগ। শুধু তাই নয়, আমরা বলি আমাদের প্রিয় দেশটাকেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে ফেলব। যার অর্থ একেবারে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের সব মানুষের জীবন সহজ করে দেব। সবার দু:খ দূর্দশা দূর করে জীবনকে আনন্দময় করে তুলব।উৎকর্ষিত তথ্য ও প্রযুক্তির ফলাফল হিসেবে আমরা আজ ইন্টারনেট, কম্পিউটার, ই-মেইল, মোবাইল ফোন, ফ্যাক্স, ওয়েব সাইট, স্যাটেলাইট ও টিভি চ্যানেল ইত্যাদি পেয়েছি। এগুলোর পজিটিভ ব্যবহার করে, দেশ বিদেশের বিভিন্ন কলেজ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি কার্যক্রম, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যে কোন লেনদেন ও তথ্যাবলী আদান-প্রদান দুষ্প্রাপ্য বই-পুস্তক ও কিতাবাদি সংগ্রহ করা, দূরারোগ্য রোগব্যাধি দ্রæত সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা, সৌর জগতের রহস্যাবলী উদ্ঘাটন, ক্যামেরার মাধ্যমে জান-মালের হেফাজত ইত্যাদি ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তি যে ভূমিকা রেখেছে, অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।আবার এ তথ্য ও প্রযুক্তির নেগেটিভ ব্যবহারকে চুরি, ডাকাতি, চরিত্র হননকারী, মানবতা ধ্বংসকারী চলচ্চিত্র ছায়াছবি, সিনেমা, গাচ-গানের আচারানুষ্ঠান, ধর্ষণ, মদ-জুয়া, ফেনসিডিল, হিরোইন, ইয়াবা সেবন, যুবক-যুবতী নারী-পুরুষের প্রেম নামক অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং ইভটিজিং ইত্যাদি উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা ও মনুষ্যত্ব-মানবতা বিধ্বংসী কার্যাবলীর প্রতিচ্ছবি ও প্রশিক্ষণ প্রতিনিয়ত চলছে। এ অপরাধ সমূহ সংক্রামক ব্যাধির মত। তাই বর্তমানে মিডিয়া ও পত্র-পত্রিকা খুলতেই উল্লেখিত অপরাধ সমূহ সংগঠিত হওয়ার খবরা-খবর আমরা দেখতে পাচ্ছি। আগে সিনেমা, টিভি, নাচ-গান ইত্যাদি দেখা ও শুনার জন্য শহরে, বাজারে ও দোকানে যেতে হতো কিন্তু বর্তমানে এগুলোর দেখার জন্য শহরে, বাজারে দোকানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই স্যাটেলাইট ও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমাদের গ্রামে-গঞ্জে, হাতে-হাতে মোবাইল ফোন, টি.ভি, কম্পিউটার যখন তখন যেখানে সেখানে দেখা ও শুনা খুব সহজ হয়ে গেছে। স্যাটেলাইট মিডিয়ার মাধ্যমে দেখে শুনেও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে উল্লেখিত অপরাধ সমূহ আমাদের সমাজে সংগঠিত হচ্ছে। এর জন্য তথ্য ও প্রযুক্তির নেগেটিভ বা অপ-ব্যবহারই দায়ী।এ ব্যাপারে মাসিক পত্রিকায় এক জনৈক প্রবন্ধকার লিখেছেন, ‘সিনেমা এবং টিভিতে এলকোহল পানের দৃশ্যাবলী অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এলকোহলের আসক্তি সৃষ্টি করে।সিনেমা মানুষের কতটুকু ভালো করছে, তার হিসেব কষার জন্য বিলেত যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সিনেমা ও টিভির সাথে যারা জড়িত আছেন, তারা যদি জাতির প্রতি দায়িত্বশীল না হন, সমাজের উন্নয়নের চিন্তা যদি তাদের মাথায় না থাকে, তবে ঐসব সিনেমা টিভির অনুষ্ঠান মানব সমাজের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশী করবে- এটাইতো স্বাভাবিক।সম্প্রতি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সিনেমা/টিভিতে ক্রমাগত এলকোহল সেবনের দৃশ্য দেখতে দেখতে অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও এক বিরাট অংশ এলকোহল আসক্তির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সমাজের জন্য এটি নি:সন্দেহে আতঙ্কের বিষয়। দেশের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মাদকাসক্তি বৃদ্ধির যে হার, তা সত্যি উদ্বেগজনক। আমেরিকার চৎরসব ঞবষবারংরড়হ চৎড়মৎধস-এর দুই-তৃতীয়াংশ প্রোগ্রামে নিয়মিত এলকোহল সেবনের দৃশ্য থাকে। ফলে কিশোর-কিশোরীরা ভীষণভাবে এলকোহল পানের দিকে আকর্ষিত হচ্ছে।তবে টিভি/সিনেমা দেখলেই যে এলকোহল পানের আগ্রহ জন্মায় তা নয়, কিন্তু এলকোহল পানের আগ্রহ বাড়াতে এটি একটি বিরাট ভূমিকা রাখে তা বলা যায়। টিভি ও সিনেমা নির্মাতারা বিষয়টি মাথায় রাখলেই হয়।’স্যাটেলাইট মিডিয়া’র মাাধ্যমে বাংলাদেশের ৩০টির বেশি চ্যানেল এবং প্রতিবেশি দেশসমূহের বিশেষ করে ভারতীয় স্টার জলসা ও জি-বাংলার মত চ্যানেলগুলোতে প্রকাশিত ও প্রচারিত উলঙ্গ-অর্ধনগ্ন ছায়াছবি অবৈধ মেলামেশা ইত্যাদির প্রতিচ্ছবি শুধ নয়, সেটা বড়দের সাথে সাথে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের মনুষ্যত্ব ও মননশীল মেধা বিকাশে চরমভাবে আঘাত হানছে। সম্প্রতি পাখি ড্রেস এর আবদার না মেটানোয় এদেশের এক বা একাধিক কিশোরীর আত্মহত্যার খবর সবার জানা। এভাবে আরো কতকিছু।প্রসঙ্গত: উল্লেখ না করলে হয় না ফেসবুকের কথা। বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম, ব্যবসা-বানিজ্য ও নারী-পুরুষকে এবং পুরুষ-নারীকে উত্যক্ত করার মাধ্যমে হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার হচ্ছে।বিশিষ্ট মনোরোগ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: মোহিত কামালের মতে, একদল যুবক ফেসবুকে মেয়েদের নানাভাবে উত্যক্ত করা সহ প্রতারণা করে থাকে। (প্রথম আলো, ১ ডিসেম্বর-২০১৪, পৃ:৯) প্রথম আলোর হিসাব অনুযায়ী ইন্টারনেট সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে বর্তমানে বিশ্বে ১৬০ কোটির বেশি লোক যুক্ত রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১৩৫টি কোটি মাসে অন্তত একবার ফেসবুক ব্যবহার করে। তারা সবাই মিলে মাসে ৩০ কোটি ছবি আপলোড করে এবং একবার ঢুকলে প্রায় ২০ মিনিট সেখানেই থাকে। প্রতি সেকেন্ডে গড়ে পাঁচটি নতুন প্রোফাইল খোলা হয়। দেশে মোট ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সংখ্যা ১ কোটি ৮ লাখ, সংখ্যা ২০০৯ সালে চিল ৯৬ হাজার। এদেরও যে, মধ্যে ৭৯.৬% পুরুষ ও ২০.৪% নারী। বয়স ভেদে ১৩-২৫ বয়সী ৭৩%, ২৬-৩৪ বয়সী ২০%, ৩৫-৪৫ বয়সী ৫%, ৪৬-৫৫ বয়সী ১% ও ৫৫+ ১% লোক ফেসবুক ব্যবহার করে। (প্রথম আলো, ১ ডিসেম্বর-২০১৪, পৃ:৯)উল্লেখিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ৯৩% ফেসবুক ব্যবহারকারী ১৩-১৪ বয়সী, যে বয়স হলো নিজেকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার বয়স। লেখাপড়ার বয়স, তাই দেখা যায় এ বয়সী ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া না করে রাস্তার পার্শ্বে, বিভিন্ন উদ্যানে, ব্রীজের রেলিংয়ে, বিল্ডিংয়ৈর ছাদে, বেলকনিতে, দোকানে, বাসায়, মোবাইল, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার ইত্যাদি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে আছে, পরীক্ষার ২/৩ মাস পূর্বে কোচিং, প্রাইভেট ও বিভিন্ন স্বজনপ্রীতি ও হুমকি-ধমকির মাধ্যমে এ+ ও গোল্ডেন এ+ সহ অনার্স-মাস্টার্স ও কামিল পাশ করে যাচ্ছে।চাকুরির বেলায় হলে কে মেধাবী, কার মধ্যে নৈতিকতার শিক্ষা পাওয়া যায় এবং কে যোগ্যতা সম্পন্ন তা যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঘুষ ও ক্ষমতার বলে চাকুরি করে যাচ্ছে। পিতা-মাতা ও অভিভাবকমন্ডলী ও ছেলে-মেয়েকে বলে থাকে, তুমি দরখাস্ত কর; যা করার আমরা করব।

প্রিয় পাঠক! স্যাটেলাইট-মিডিয়া, মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভি চ্যানেল এক কথায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নেগেটিভ ব্যবহারের কারণে আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা মধ্যে প্রধান প্রধান কয়েকটি হলো:

* বিনোদনের নামে বেহায়াপনা ও বেলেল্লাপনার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হচ্ছে।

* শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী আচার ব্যবহার ও নমনীয় আদব-কায়দা শেখার বিপরীতে ঔদ্ধত্য ও উগ্রবাদীতার শিক্ষা পাচ্ছে।* অশ্লীল নাটক, সংলাপ, প্রেমাবেগ, পরকীয়া প্রেমের শিক্ষা পাছে।ছ

* পিতা-মাতার সাথে বেয়াদবির শিক্ষা পাচ্ছে।* অপকর্ম, অবৈধ উপার্জন সুদ-ঘুষ ও দুর্নীতির হরেক ধরণের অপরাধের ট্রেনিং পাচ্ছে।

* মিথ্যা ও বানোয়াট ধোকাবাজীপূর্ণ কথা-বার্তায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা চরমভাবে পটু হচ্ছে।

* বেপর্দা চলাফেলা, অবৈধ মেলামেশায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

* মদ-জুয়া, হিরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা ইত্যাদি নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবনে আগ্রহ জন্মাচ্ছে।

* আদর্শ জীবন, আদর্শ চিন্তা-চেতনার পরিবর্তে জঙ্গিবাদী, উগ্রবাদী, চুরি, ডাকাতি, খুন-খারাবি ও সন্ত্রাসবাদিতার ট্রেনিং পাচ্ছে।* গোপনে যে কোন অপরাধ ঘটানো সহজ হয়ে গেছে।

* শিক্ষার্থীদেরকে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে লেখাপড়া করে নিজে জীবন গড়ার ও সচ্চরিত্রবান মানুষ হওয়া থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

* সর্বোপরি আল্লাহকে ভয় এর পরিবর্তে পুলিশ ও পিতা-মাতাকে ভয় করছে।

* রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র মুহাব্বতের পরিবর্তে অবৈধ নারী-পুরুষের প্রেমের শিক্ষা পাচ্ছে। আল্লাহর অনুগ্রহ দয়া প্রাপ্ত বান্দা নবী-অলীদের অনুসরণ-অনুকরণের পরিবর্তে অভিনেতা, নায়ক-নায়িকা ও দাইয়ুসকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করছে।উপরোক্ত সমস্যাবলী সমাধান করে ছেলে-মেয়েকে সুশিক্ষিত ও আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে পিতা-মাতা, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ বিভিন্ন স্তরের ক্ষমতাশীল কর্মকর্তাদেরকে সচেতন হতে হবে।

এ ব্যাপারে যে সব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে, তার মধ্যে প্রধান প্রধান কয়েকটি হলো:

* পিতা-মাতার দায়িত্ব হলো-সন্তান জন্ম হলে তার দুনিয়াবী ও আখেরাতে চিন্তা-ভাবনা করে কোন নবী, সাহাবী, তাবেয়ী অলী দ্বীনদার-পরহেজগারের নামের সাথে মিলিয়ে সুন্দর নাম রাখা।হাদীস শরীফে আছে,عن ابن الدرداء (رضـ) قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انكم تدعون يوم القيامة باسما ئكم واسماء ابائكم فاحسنوا اسمائكم ـ (رواه ابو داؤد)হযরত আবু দারদা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, পিতা-মাতা ছেলে-মেয়েকে উত্তম আদর্শ তথা সচ্চরিত্র শিক্ষা দেওয়া সদ্কা করা হতে উত্তম।* কবি আহমদ শওকী মিশরী বলেছেন, ليس اليتيم انتهى ابواه من + هم الحياة وخلفاه ذليلا ـفا صاب بالد الحكيمة منما + وجحسن تربية الزمان بديلا ـان اليتيم هو الذى تلق له + اما تخلت اوابا مشغولا ـঅর্থাৎ ‘সে ব্যক্তি এতিম নয়, যার পিতা-মাতা শেষ করেছে ইহজগতের চিন্তা অর্থাৎ পৃথিবী হতে বিদায় নিয়েছে আর তাকে অসহায় অবস্থায় পশ্চাতে রেখে গেছে। আর সে ব্যক্তিও এতিম নয় যে পিতা-মাতা হতে দুনিয়াতে চলার জ্ঞান অর্জন করেছে, আর যুগের সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র পেয়েছে। প্রকৃত এতিম ঐ ব্যক্তি- যে পিতা-মাতার সাক্ষাৎ পেয়েছে, মা তার প্রতি দৃষ্টি দেননি আর পিতা কাজে ব্যস্ত রয়েছে।* ছেলে-মেয়েরা ভাল মন্দ পার্থক্য করার জ্ঞান গরীমা না হওয়ার কারণে অনেক কিছুই চাইবে; কিন্তু পিতা-মাতা ও অভিভাবকমন্ডলীকে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ। যা তাদের সচ্চরিত্র গঠনে সহায়ক তা দিতে হবে। আর যা অসচ্চরিত্র গঠনে সহায়ক তা হতে বুঝিয়ে দূরে রাখতে হবে।

* ভাল ও পূণ্যময় কাজে সহযোগিতা করতে হবে টাকা-পয়সা খরচ, করতে হবে মন্দ কাজ হতে বারণ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এর বিপরীতে ছেলে-মেয়েকে নামাজ কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি ধর্মীয় কাজের আদেশ দিতে আমাদের লজ্জা হয়। অপর পক্ষে উলঙ্গ-অর্ধালঙ্গ কাপড় ক্রয় করে দেয়া, চরিত্র ধ্বংসকারী ছায়াছবি, নাচ-গান, মদের মত নেশা জাতীয় পানীয় সেবন এবং অবৈধ দৃশ্যাবলী, নারী-পুরুষের প্রচলিত ঘৃণাত্মক প্রেম ও পরকীয়া প্রেম ইত্যাদি ছেলে-মেয়ে, পিতা-মাতা, দাদা-দাদী এক কথায় পরিবারের সকলে মিলে দেখতে আমাদের লজ্জা হয় না। যা সরাসরি আল্লাহ ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিষেধ করেছেন। যেমন: ভাল কাজে সহযোগিতা করা ও অসৎ কাজে সহযোগিতা না করা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন:وتعاونوا على البرو التقوى و لا تعاونوا على الاثم والعدوان‘তোমরা পূণ্য ও তাক্ওয়ার কাজে পরস্পরে সহযোগিতা করো। গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন:ان الذين يحبون ان تشيع الفاحشة فى الذين امنوا لهم عذاب اليم فى الدنياوا لا خرة ـ‘যে সব লোক চায় যে, ঈমানদার লোকদের মধ্যে নির্লজ্জতা বিস্তার লাভ করুক, তারা দুনিয়অ ও আখিরাতে কঠিন শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। আল্লাহর এ বাণী সমূহের প্রতিফলন আমরা আজ সমাজে গ্রামে-গঞ্জে দেখতে পাচ্ছি; ছেলে বড় হলে, মেয়ে বড় হলে পিতা-মাতার শান্তি নেই, পথে-ঘাটে ছেলে-মেয়ের নিরাপত্তা নেই।

* হালাল পথে আয় হালাল পথে ব্যয় করা। হাদীস শরীফে আছে, ঐ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু যে কিভাবে আয় করে এবং কিভাবে ব্যয় করে চিন্তা-ভাবনা করে না। কোন সভ্য মানুষকে যদি প্রশ্ন করা হয়, নাচ-গানশুনা, ছায়াছবি অশ্লীল নাটক, যুবক-যুবতীর অবাধ মেলামেশার দৃশ্যাবলী দেখা কেমন? উত্তর আসবে অবশ্যই এ দৃশ্যাবলি ঘৃণ্য। ইসলাম সভ্যতার ধর্ম। মুসলিম হলো সভ্য জাতি। সভ্যতা, মানবতা, লজ্জাশীলতা ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়ার জন্যই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে প্রেরণ করা হয়েছে।রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ঈমানের সত্তরটিরও বেশি শাখা আছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি শাখা হলো লজ্জাশীলতা। সভ্য জাতি যা গ্রহণ করতে পারে, তা ইসলাম হারাম করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,ومن الناس من يشترى لهو الحديث ليضل عن سبيل الله بغير علم ويتخذها هذوا اولئك لهم عذاب مهين ـ‘মানুষের মধ্যে এমন কতেক মানুষ আছে, যাদের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে পথভ্রষ্ট করার জন্যে মন্দ কথা ক্রয় করে। একে তারা উপহাস স্বরূপ গ্রহণ করেছে। তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে দুররে মনসুর সহ বিভিন্ন তাফসীরে আছে আলোচ্য আয়াতটি নাচ-গান প্রসঙ্গে নাজিল হয়েছে।قال الحسن البصرى نزلت هذه الاية فى الغناء والمزامير ـহযরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন- আলোচ্য আয়াতটি নাচ-গান ও বাদ্য-বাজনা সম্পর্ক নাজিল হয়েছে। (ইবনে কাছির)نزلت فى رجل من قريش اشترى جارية مغنيةআলোচ্য আয়াত কুরাইশের এক ব্যক্তি যে নাচ-গানের জন্য গায়িকা ক্রয় করেছিল, তার প্রসঙ্গে নাজিল হয়েছে। (দূররে মনসুর, ১১ খন্ড, ৬১৫ পৃ.)হাদীস শরীফে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,عن جابر قال قال رسول الله عليه وسلم الغناء ينبت النفاق فى القلب كما ينبت الماء الزرع ـ (رواه البيهقى)হযরত যাবির (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, গান মানুষের অন্তরের ভিতর মুনাফিকী উৎপাদন করে, যেমন শস্য উৎপাদন করে থাকে।নাচ-গান যে দেখে ও দেখায় উভয়ের উপর আল্লাহর লা’নত করেছেন, হযরত হাসান বসরী (রহ.) বলেছেন, আমার নিকট এ হাদীস পৌঁছেছে যে, যে (নাচ-গান) দেখে ও দেখায়, উভয়ের প্রতি আল্লাহর লা’নত। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেন,امرنى ربى عزوجل بحق المعازف والمزامير ـ‘আমার প্রভু আমাকে সব প্রকারের ঢোল, যাবতীয় বাদ্য-বাজনা নির্মূল করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।প্রিয় পাঠক! যে, নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা, বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতা যা সভ্য সমাজ গ্রহণ করে না। আল্লাহ ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে কাজে নারাজ, যাকে শরীয়ত হারাম করেছে তা আজ আমরা হাতে হাতে, ঘরে-ঘরে, দোকানে-পাঠে ও সমাজে সমাজে দেখার জন্য, শুনার জন্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য লক্ষ-লক্ষ, টাকা ব্যয় করছি অথচ, যাতে টাকা পয়সা ব্যয় করাও সম্পূর্ণ হারাম। প্রতিনিয়ত নাচ-গানে ও বেহায়াপনা লেগে থাকার কারণে আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারাও কবীরা গুনাহ ও যেনার গুনাহ্ হচ্ছে ঘন্টার ঘন্টা। হাদীস শরীফে আচে,عن ابى هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم العينان زناهما النظر ـ والاذنان زناهما الاستماع واللسان زناه الكلام واليد زناها البطش والرجل زناها الخطى والقلب يهوى ويتمنى ويصدق ذالك الفرج ويكذبه ـ (رواه مسلم)‘হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হযরত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন, চক্ষুদ্বয়ের যেনা হলো কুদৃষ্টি দেওয়া, কান দ্বয়ের যেনা হলো কণ্ঠ শ্রবণ করা, জিহŸার যেনা হলো অশ্লীল কথা বলা, হাতের যেনা হলো স্পর্শ করা, পায়ের যেনা হলো হেঁটে যাওয়া। অন্তর কামনা ও বাসনা পোষণ করে, আর লজ্জাস্থান একে সত্যে (বাস্তবে) পরিণত করে কিংবা অসত্যে (অবাস্তবে) পরিণত করে।এ ধরণের হারাম কাজকে কেউ যদি হালাল মনে করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। কারণ শরীয়তের নিয়ম হলো, استحلال المعصية كفر গুনাহের কাজকে হালাল মনে করা কুফরী।* বাল্য-কাল হতে পিতা-মাতা তাদের সাথে ছেলে-মেয়ে নামাজের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

* হাদীস শরীফে আছে, তোমরা-তোমাদের ছেলে মেয়ে ৭ বছর বয়স হলে নামাজের শিক্ষা দাও। ৯ বছর বয়স হলে এ নামাজই আমাদেরকে যাবতীয় অন্যান্য অপরাধ অবিচার ব্যভিচার হতে রক্ষা করবে।আল্লাহ বলেন, ان الصلوة تنهى عن الفحشاء وا لمنكر ـ ‘নিশ্চয়ই নামাজ অন্যায় অপছন্দনীয় কাজ হতে রক্ষা করে।

* দ্বীনি জ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে পিতা-মাতাকে যতœবান হতে হবে। ফলে পরিণত বয়সে ছেলে-মেয়ে অবাধ্য হবে না। পিতা-মাতাকে ছেলে-মেয়ের জন্য চিন্তা করতে হবে না।হাদীস শরীফে আছে, শৈশবকালে ইলম শিক্ষা করা পাথরে কারুকার্য খচিত করার ন্যায়। আর বৃদ্ধকালে ইলম শিক্ষা করা পানির উপর লেখার মত।

* পিতা-মাতা ও শিক্ষকমন্ডলী ছাত্র-ছাত্রীকে আদব-কায়দার সুফল ও বেয়াদবীর কুফল সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। কারণ- بى ادب محروم كشت ازفضل رب বেয়াদব আল্লাহর রহমত হতে বঞ্চিত।

* তাক্ওয়া পরহেজগারীর শিক্ষা দিতে হবে।

* এ পৃথিবীতে কে কি কাজের জন্য আমাদের কাছে স্মরণীয় এ ব্যাপারে ছেলে-মেয়েকে জানাতে হবে। যেমন- ফেরাউন, হামান, শাদ্দাদ ও আবু জেহেলকে আল্লাহর সাথে নাফরমানি ও নবী-রাসূলের সাথে বেয়াদবীর কারণে তাদেরকে আমরা খোদাদ্রোহী হিসেবে স্মরণ করি। অপর দিকে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.), হযরত ওমর (রা.), হযরত ওসমান (রা.), বেলায়তের শাহেন শাহ্ মাওলা আলী (রা.), হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.), খাজা মঈনউদ্দীন চিশ্তি (রহ.), হযরত ইমামুত তরীকত আব্দুল বারী (রহ.) খাজায়ে বাঙ্গাল হযরত মুনিরুদ্দীন হালিশহরী (রহ.) ও কুতুবুল আলম সৈয়দ মীর আহমদ মুনিরী (রহ.) সহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী তবে তাবেয়ীন ও আউলিয়ায়ে কেরামকে দ্বীন ইসলামের ধারক-বাহক ও প্রতীক হিসেবে আমাদের কাছে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন।

* মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠালে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। ছেলে-মেয়ে লেখাপড়ার নামে মার্কেট, উদ্যানে সিনেমা হলে ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডায় দিন কাটাচ্ছে কি-না।

* চরিত্রহীন ছেলে-মেয়ের সাথে আপনার-আমার ছেলের মেয়ের বন্ধুত্ব আছে খবর নিতে হবে।হযরত আলী (রা:) বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বন্ধুর কিছু গুণাগুণের কথা দেওয়ানে আলীতে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, لاتصحبن الاتقيامهذ با + عفيفا زكيا منزجا للمواغىতুমি এমন মানুষকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না, যার মধ্যে তাক্ওয়া পরহেজগারী নেই। যার চরিত্র সুন্দর নেই। যার মধ্যে ধীশক্তি নেই, যার মধ্যে আত্মশুদ্ধি নেই এবং যে ওয়াদা পূরণ করে না।

* লেখাপড়ার নাম অশ্লীল কাহিনীর উপন্যাস বই-পুস্তক পড়ছে কি-না, চেক করতে হবে। নবী রাসূলের জীবনী, আউলিয়ায়ে কেরামের জীবনী ইত্যাদি যা পড়লে ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি হবে। তা পাঠ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

* আকায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের তালীম দিতে হবে। বাতিলপন্থি যারা নবী রাসূল, অলীদের শান-মানে বেয়াদবি করে, আইম্মায়ে কেরামের মতাদর্শের উপর মতবিরোধ করে, তাদের বই পুস্তক, সাহচর্য ইত্যাদিতে যাতে ঝুঁকে না পরে, সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি করতে হবে।

* টাকা-পয়সা যাতে অবাধ খরত করতে না পারে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

* শালীনতা, লজ্জাশীলতা রক্ষামূলক কাপড়-চোপড়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

* মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি দেওয়ার ক্ষেত্রে চিন্তা-ভাবনা করে দিতে হবে।

* স্যাটেলাইটে প্রকাশিত ও প্রচারিত অনুষ্ঠানের শত করা ৯৫% ভাগের বেশি চরিত্র, মানবতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতকারী অনুষ্ঠান, যা কখনো কোন শ্রেণীর মানুষের জন্য কলল্যাণকর হতে পারে না। সুতরাং সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে চিন্তা করা প্রয়োজন আমাদের কারণেই যত ধরণের অপরাধের প্রশিক্ষণ কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা অতিসহজে লাভ করা সম্ভব হচ্ছে।

* হক্কানী-রাব্বানী ওলামায়ে কেরাম ও সঠিক আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের অনুসারী পীর-মাশায়েখের ছোহবতে সন্তানদের বসাতে হবে। জ্ঞানী-গুণী মানুষের ছোহবতে নিয়ে আসতে হবে। হাদীস শরীফে আছে- الصحبة متأثرة ছোহবতে আছর হয়।হাদীস শরীফে আছেÑ الوحدة خير من جليس السء و جليس الصالح خير من جليس الوحدةঅসৎ সঙ্গের চেয়ে একাকী বসে থাকা ভাল, একাকী বসে থাকার চেয়ে সৎ সঙ্গ ভাল।কারণ, সৎলোকের ছোহবতে থাকলে নতুন নতুন সৎ কাজের দিকে মন ধাবিত হবে। আর অসৎ লোকের ছোহবতে থাকলে নতুন নতুন অসৎ কাজে প্রশিক্ষণে পাওয়া যাবে। কথায় আছে- সৎ সঙ্গ স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গ সর্বনাশ।

প্রসঙ্গত: এ ফেত্না-ফ্যাসাদের যুগে ফটিকছড়ি পৌরসভার শফিকীয়া দরবার শরীফের মহান মোর্শেদে পিতা-মাতা করছেন। তাঁদের ছোহবতে এসে অসংখ্য যুবক ও পথহারা মানুষ সঠিক পথের সন্ধান পাচ্ছে। তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন- ‘হে আমার ভক্ত মুরিদরা! তোমরা আমার কাছে এসেছ আমি তোমাদেরকে কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই, তবে আমরা যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কর, পিতা-মাতার সম্মান কর, ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজের পর ত্বরীকতের নির্ধারিত ওয়াজিফা আদায় কর, নবী ও অলীদের মহব্বত কর, সঠিক আকায়েদ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী ওলামায়ে কেরামের শ্রদ্ধা কর তাহলে আমি তোমাদের একটি জিনিসের প্রতিশ্রæতি দিচ্ছি যে, তোমরা মৃত্যুকালে বে-ঈমান হয়ে মৃত্যুবরণ করবে না।প্রিয় পাঠক! জ্ঞান-বিজ্ঞানের যতই বিকাশ হচ্ছে, এর নেগেটিভ ব্যবহারের কারণে ততই সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে, এটা কারো অজানা বিষয় নয়। এ ব্যাপারে লেখতে গেলে অনেক কিছু যা সচেতন পিতা-মাতাকে নিজের ছেলে-মেয়েকে সচ্চরিত্র গঠনে চিন্তা করতে হবে। সচ্চরিত্র শিখতে হবে দুশ্চরিত্রের কাছ হতে, আদব শিখতে হবে বেয়াদব হতে অর্থাৎ দুশ্চরিত্র ও বেয়াদব যা করে তা আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েকে করতে দেব না, শিখতে দেব না। এটাই সচ্চরিত্র ও আদবের শিক্ষা।এক কথায় পিতা-মাতা ও অভিভাবক, ছেলে-মেয়েকে পাহারা দিতে হবে। যেমন: পাহারা দেয় রাখাল তার গরু ছাগলের পালকে, যেমন রক্ষণাবেক্ষণ করে কৃষক তার ক্ষেত খামারকে।হে আল্লাহ! আমাদের নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, তবে তাবেয়ী ও আউলিয়ায়ে কেরামের আদর্শে আদর্শবান হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।