ফোনে বা ভিডিও কলের মাধ্যমে বিবাহ করলে তা শুদ্ধ হয়না। কেউ যদি ভুলক্রমে/না জেনে এভাবে বিয়ে করে ফেলেন তাহলে বাসরের আগে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে অবশ্যই নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে। কারন বিবাহের ইজাব কবুল শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইত্তিহাদুল মাজলিস (প্রত্যক্ষভাবে একই আসর, মজলিস, বৈঠকে) হওয়া শর্ত। ভিডিও কলের ক্ষেত্রে এই শর্তটা অনুপস্থিত। এখানে অপরপক্ষের প্রতিচ্ছবি দেখা গেলেও ব্যক্তি স্বশরীরে অনুপস্থিত। তাই ইত্তিহাদুল মজলিস হয়না। তবে যদি বরপক্ষের কাছে কনে পক্ষের উকিল (কাউকে নিজেদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব প্রদান ও গ্রহনের অধিকার বা সম্মতি দেয়া হলেই তিনি উকিল বা প্রতিনিধি সাব্যস্ত হন) উপস্থিত থাকে এবং তারা ইজাব কবুল করে তাহলে নিঃসন্দেহে বিবাহ হয়ে যাবে। কারন ইত্তিহাদুল মজলিসের শর্ত এক্ষেত্রে পূরন হয়ে যায়। অনুরূপভাবে কনে পক্ষের কাছে বরপক্ষের উকিল উপস্থিত থেকে ইজাব কবুল করলেও একই বিধান প্রযোজ্য। মোটকথা, কোন একপক্ষ ও অপরপক্ষের উকিলের উপস্থিতিতেও ইজাব কবুল সংঘটিত হলে বিবাহ হতে কোন সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে বর কনের ভিডিও কলের মাধ্যমে ইজাব কবুল করাও অর্থহীন। তবে দর্শক হিসেবে ভিডিও কলে থাকতে সমস্যা নেই। অতএব, দূরে অবস্থানকারী কাউকে বিবাহ করতে চাইলে ফোনের মাধ্যমেই সেখানে উপস্থিত কাউকে উকিল বানিয়ে দিবে। এবং সেই উকিল তার মুয়াক্কিলের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত অপরপক্ষের সাথে ইজাব কবুল করবেন।

রেফারেন্সঃ إمراة وكلت رجلا بأن يزوجها من نفسه فقال الوكيل اشهدوا انى قد تزوجت فلانة من نفسى إن لم يعرف الشهود فلانة لا يجوز النكاح مالم يذكر إسمها وإسم ابيها وجدها، وإن عرف الشهود فلانة وعرفوا أنه اراد به تلك المرأة يجوز، (خلاصة الفتاوى-2/15ومن شرائط الإيجاب والقبول اتحاد المجلس (الدر المختار مع الشامى-4\76)وشرط حضور شاهدين (حرين) أو حر وحرتين (مكلفين سامعين قولهما معا) (الدر المختار مع الشامى-4\78)

আরো দেখুনঃফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৯৪, ১/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬ আল মাবসুত ৫/১৬-১৭, ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৬ফাতওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাহ ১৮/৯০(এটা আরবের কেন্দ্রীয় ফতওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্ত)

যদি একান্তই করতে হয়, সব কিছু যদি জানাজানি হ্য়। একে অপরকে চেনে। উভয়েই পরিবারে বিষয়টি জানাজানি থাকে। মেয়ে যদি ছেলেকে পূর্ব থেকে না চেনে তাহলে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখাদেখি ও কথাবার্তা বলতে পারে। ভিডিও কলের মাধ্যমে ইজাব ও কবুল করে রেকর্ড করতে হবে, যেন সন্দেহ না থাকে তাহলে জায়েয হবে। আকদ দেশে হবে। অনুষ্ঠানে উভয় পক্ষের মানুষ উপস্থিত থাকবেন। মেয়ের পক্ষ ইযন নিয়ে উপস্থিত হবে। হুজুর ভিডিও কলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানস্থলে উকিল ও সাক্ষীদ্বয়ের সামনে ছেলের সম্মতি নেবে। স্কেন করে উভয়ের স্বাক্ষর নেয়া হবে কাবিন নামায়। তারপরও ছেলে দেশে আসলে আবার আকদ পড়ে নিলে ভালো। মূল বিষয় হলো বিয়ের বিষয়টি সন্দেহ মুক্ত হতে হবে। বহুল প্রচার ও জানাজানি হতে হবে।