হযরত শাহ্‌ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ (র:) এর কয়েকটি কারামত-

হাফেজ ওহিদুর রহমান (র:) ছিলেন ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) এর সুযোগ্য খলিফা। তিনি স্বীয় পীরের কয়েকটা কারামত বর্ণনা করেন। কারামত গুলো শুনে লিপিবদ্ধ করেছিলেন ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার সুবার বাজার মির্জানগর গ্রামের মরহুম কাজী বজলের রহমান। নিম্নে তা দেওয়া হলো-

[ ১ ] ফেনী শহরের তমিজিয়া মসজিদে ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) ও সন্দীপের মাওলানা ওজি উল্লাহ (র:) এর সাথে একটি মাসয়ালা নিয়ে মতানৈক্য হয়। ছুফি সাহেব হুজুর বলেন,এটা জায়েজ নাই। মাওলানা সাহেব বলেন জায়েজ। তখন মাওলানা সাহেব ফতওয়া লেখা আরম্ভ করলো। ছুফি সাহেব হুজুর মসজিদের এক পার্শ্বে বসা ছিলেন। তিনি বলেন, মাওলানা সাহেব আপনি ভুল ফতওয়া লিখতেছেন। আমাকে এখনই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটা জায়েজ নাই। আপনি অমুক কিতাবের এত পৃষ্টায় দেখেন। তখন মাওলানা সাহেব ওই কিতাব দেখে বুঝলেন উনার মাসয়ালা ভুল ছিলো।

[২ ] ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) কে এক গরীর মুরিদ দাওয়াত করিয়া বাড়িতে আনলেন। দাওয়াত খাওয়ার পর বিদায় নিয়ে হুজুর কিছুদূর গেলেন। তখন ঐ গরীব মুরিদের অন্তরে জ্বালাপোড়া শুরু হইল, হায়! আমি হুজুরকে উপযুক্ত খেদমত করতে পারি নি। তখন ছুফি সাহেব হুজুর দাড়াইয়া মুরিদকে কাছে ডেকে আনলেন এবং বললেন, বাবা আপনি কোন চিন্তা করবেন না। ছুফি সাহেব টাকা চায় না, মন চায়। আপনার মন পাওয়া গেল। তখন গরীব মুরিদ খুশি হয়ে গেল।

[৩ ] ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা চিথলিয়া গ্রামে ১৯৪৩ ইং সালে জাপান বিট্রিশের যুদ্ধের সময় এয়ারপ্লেনের ঘাঁটির প্রোগ্রাম হয়েছিলো। তখন গ্রামবাসী ছুফি সাহেব হুজুরকে দাওয়াত দিয়ে দোয়ার আয়োজন করিয়েছিলেন। ততক্ষণাৎ ধনিকুন্ডা চিথলিয়া গ্রাম থেকে ঘাঁটি উঠিয়া পূর্ব দিকে সলিয়া গ্রামে ঘাঁটির প্রোগ্রাম হয়। তখন আবার সলিয়া বাসি ছুফি সাহেব হুজুর (র:) কে দোয়ার জন্য আনার চেষ্টা করে। হুজুর তখন বলেছিলেন, আমি ঘাঁটির বৈদ্য নাকি? পূনরায় হুজুর আর আসেন নি।

[৪ ] একদা ছুফি সাহেব হুজুর (র:) কে এক মুরিদ দাওয়াত করলো। হুজুরের মেহমানদারির জন্য মুরিদ অংশীদার পুকুর থেকে মাছ উঠালো। খাবার পরিবেশনের সময় মুরিদ জানতে চাইলো হুজুর! তাকওয়া কি? তখন ছুফি সাহেব হুজুর (র:) উত্তর দিয়েছিলেন, তাকওয়া অর্থ হলো আপনার পুকুরের মাছের সাথে আমার হাত না লাগানো। সুবহানাল্লাহ!

[৫] তিনি আমাদের ফটিকছড়িতে তরিকতের কাজে হেঁয়াকো হয়ে আসা যাওয়া করতেন। একবার ফটিকছড়ি থেকে পায়দলে হেঁটে চলে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে এক মহিলাকে দেখলেন। একটু তাকিয়ে তিনি চলতে পথ চলতে লাগলেন এবং বলে উঠলেন তোমার পিছনে আজরাঈল আলাইহিস সালাম দাঁড়িয়ে আছে। আর তুমি শিম (ছৈ) খুঁজতেছ। সাথে অনেক মুরিদ ছিলেন। কিন্তু হুজুর কেন এরুপ বললেন কেউ বুঝতে পারেনি। একটু সামনে যেতেই শুনা গেল ঐ বাড়ি থেকে কান্নাকাটির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। খবর নিয়ে দেখা গেছে, যে মহিলা শিম খুঁজতে ছিল ঐ মহিলা ইন্তেকাল করেছেন।

আল্লাহ পাক আমাদেরকে এই থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার তাওফিক দান করুক, আমিন।